নজরুল তাঁর গানে প্রাণ খোলা সুরের উচ্ছাসে নানান রাগরাগিণী ভেঙেছেন এবং নতুন করে রাগরাগিণীর নামকরণও করেছেন। যেমন- বুন কুন তলা, দেবযানী, সন্ধ্যা মালতি, অরুন রঞ্জনী ইত্যাদি। এভাবেই সৃষ্টিশীল থেকেছেন যতদিন গান রচনা করেছেন।
লেটো দলে থাকার সময়কে বাদ দিলে মাত্র বাইশ বছর ধরে তিনি গান রচনা করেছেন। ১৯২১ থেকে ১৯২৬ পর্যন্ত যা লিখেছেন তা মূলত সমাজ জাগরণের গান। এর পরের কয়েকবছর ১৯৩০ সাল পর্যন্ত রচিত তার গানই বাংলা গানের জগতে পরিচিত গজল বলে। কবির গান বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে।
কবির একটি অভ্যাস ছিল রাস্তায় চলতে চলতে বা কারো সাথে কথা বলতে বলতে হয়তো একটা ভাল লাইন মনের মধ্যে এসে গেল। কবি সঙ্গে সঙ্গে সেই লাইন আলাদা খাতা বা টুকরো কাগজে লিখে রাখতেন। পরে সেই লেখা থেকে মিলিয়ে মিলিয়ে বা তার সাথে আরও দু-চার লাইন যুক্ত করে একটা পুরো গান দাঁড় করাতেন
🎵 গানের নাম - পথ চলিতে যদি কভু
🎧 Song Credits:
🎵 গান - Path Cholite Jodi
🎬 অ্যালবাম - Path Cholite Jodi
Path Cholite Jodi Song Lyrics 👇
পথ চলিতে
যদি চকিতে কভু দেখা হয় পরান-প্রিয়
চাহিতে যেমন আগের দিনে
তেমনি মদির চোখে চাহিও
পথ চলিতে, যদি চকিতে...
যদি গো সেদিন চোখে আসে জল
লুকাতে সে জল করিও না ছল
যে-প্রিয় নামে ডাকিতে মোরে
সে-নাম ধরে বারেক ডাকিও
পথ চলিতে, যদি চকিতে...
তোমার প্রিয় যদি পাশে রয়
মোরও প্রিয় সে, করিও না ভয়
কহিব তা'রে-
"আমার প্রিয়ারে আমারো অধিক ভালোবাসিও"
পথ চলিতে,
যদি চকিতে কভু দেখা হয় পরান-প্রিয়
পথ চলিতে, যদি চকিতে...
বিরহ-বিধুর মোরে হেরিয়া
ব্যথা যদি পাও যাব সরিয়া
রব না হ'য়ে পথের কাঁটা (x2)
মাগিব এ বর মোরে ভুলিও
পথ চলিতে,
যদি চকিতে কভু দেখা হয় পরান-প্রিয় (x2)
পথ চলিতে, যদি চকিতে...
🔊 আমার মতামত - কথার গুনাগুন সহজ সরল। খুব সাধারণ মনকে ব্যাথিত করে তোলে। প্রিয়ার প্রতি কতটা আবেগ মাখা আকুতি। মনে কতটা কষ্ট থেকে উনি এগুলো লিখেছিলেন, আর সেগুলোই হয়ে গেলো ইতিহাস সেরা হামদ- নাত। সঙ্গীত বুঝি এটাই, কথা, সুর, গায়কি, যন্ত্রণানুসঙ্গ - সব কিছুই যেন শ্রোতাবিশেষে তার অতীত দিনে ফিরিয়ে নিয়ে যায়... যেমন কথা তেমন সুর তেমনি কণ্ঠ।
গানটির আদি রেকর্ডিং হয়েছিলো ১৯৩৩ সালে। সে সময়ে শিল্পী ছিলো
জ্ঞান দত্ত। তবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সাধক কণ্ঠে কবি নজরুলের এই অতি প্রিয় বিরহের গানটি শুনেও অন্যরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার ❤️