গ্রামোফোন কোম্পানির সঙ্গে কাজী নজরুলের সম্পর্ক ছিল গভীর। দীর্ঘদিন গ্রামোফোন কোম্পানির প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি। বহু মানুষ তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গান শিখেছিলেন তাদের মধ্যে প্রথম দিককার ইন্দুবালা দেবী, আঙুরবালা দেবী, কমলা ঝরিয়া এমন অনেকেই ছিলেন।
আঙুরবালা দেবীকে একটু বেশিই স্নেহ করতেন নজরুল। তার রচিত ঠুমরী এবং গজলই বেশি শিখিয়েছিলেন আঙুরবালাকে। ফলে শুরুর দিকে তার গজলকে জনপ্রিয় করেছিলেন এরাই। নজরুল চাইতেন তার গানের প্রতিটি কথা যেন তারই মত উচ্চারিত হয় তাহলেই গানের ভাব প্রকাশ পাবে।
একবার একটি গানের লাইনে ছিল- 'বুকে কি বিন্ধিলো কেয়া', আঙুরবালা দেবী ভেবেছিলেন কবি বোধহয় নিজের ভাষা অনুযায়ী বিন্ধিলো বলছেন, তাই আঙুরবালা দেবী চলতি ভাষায় বিধিলো গেয়েছিলেন। কিছুতেই ভাব প্রকাশ হচ্ছেনা। অবশেষে যখন তিনি বিন্ধিলো গাইলেন, এক নতুন ছন্দ মাধুর্য খুঁজে পেলেন তখন। শব্দচয়নে ও সুর সংযোজনে নজরুল ছিলেন অদ্বিতীয়
🎵 গানের নাম - পাষাণের ভাঙালে ঘুম
🎧 Song Credits:
🎵 গান - Pashaner Bhangle Ghoom
🎬 অ্যালবাম - Love Songs Of Kazi Nazrul Islam
Pashaner Bhangle Ghoom Song Lyrics 👇
পাষাণের ভাঙালে ঘুম কে তুমি সোনার ছোঁওয়ায়
পাষাণের ভাঙালে ঘুম...
গলিয়া সুরের তুষার গীতি-নির্ঝর ব’য়ে যায়।
কে তুমি সোনার ছোঁওয়ায়, পাষাণের ভাঙালে ঘুম
উদাসী বিবাগী মন যাচে আজ বাহুর বাঁধন
কত জনমের কাঁদন,
কত জনমের কাঁদন ও পায়ে লুটাতে চায়।।
ও পায়ে লুটাতে চায়-
পাষাণের ভাঙালে ঘুম কে তুমি সোনার ছোঁওয়ায়
পাষাণের ভাঙালে ঘুম...
ওগো তোমার চরণ ছন্দে মোর, মুঞ্জরিল গানের মুকুল
তোমার বেণীর বন্ধে গো- মরিতে চায় সুরের বকুল
চমকে ওঠে মোর গগন-
চমকে ওঠে মোর গগন ঐ হরিণ-চোখের চাওয়ায়।
ঐ হরিণ-চোখের চাওয়ায়...
পাষাণের ভাঙালে ঘুম কে তুমি সোনার ছোঁওয়ায়
পাষাণের ভাঙালে ঘুম
🔊 আমার মতামত - একরাশ ভক্তি এবং শ্রদ্ধা প্রিয় কবি নজরুলকে। তিনি জীবনে শুধু দূঃখই পেয়েছেন - এজন্য খুব কষ্ট লাগে। মনে কতটা কষ্ট থেকে উনি এগুলো লিখেছিলেন, আর সেগুলোই হয়ে গেলো ইতিহাস সেরা হামদ- নাত। সঙ্গীত বুঝি এটাই, কথা, সুর, গায়কি, যন্ত্রণানুসঙ্গ - সব কিছুই যেন শ্রোতাবিশেষে তার অতীত দিনে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
গানটির আদি রেকর্ডিং হয়েছিলো ১৯৩২ সালে। সে সময়ে গানের কথা, সুর ও শিল্পী ছিলেন কবি নিজেই ❤️