দেয়া নেয়া সিনেমার গল্প তৈরি হয়েছিলো শ্যামল মিত্রের নিজের জীবনকে নিয়েই। বাস্তব জীবনেও শ্যামল মিত্রের বাবা রাশভারী নামি ডাক্তার সাধনকুমার মিত্র ছিলেন প্রচন্ড কড়া। নৈহাটির সেই ডাক্তার বাবু তিনি চাইতেন তাঁর ছেলেও ডাক্তারি পড়ুক অথবা সমাজের কোন একটা ট্রাডিশনাল কনভেনশনাল ওয়েতে প্রতিষ্ঠিত হোক
কিন্তু দেখা গেলো বাড়ির লোক চায় এক এবং বিধাতা চায় আরেক। ছোটবেলা থেকেই গান গাইতে ভালোবাসতো শ্যামল মিত্র এবং তিনি চাইতেন তিনি গানটাই করবেন। মজা দেখুন, একেবারে যেন বাংলা সিনেমার গল্প। বাবা একদিকে প্রচন্ড পরিশ্রম করতেন, ডাক্তার হিসেবে ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন আবার অন্যদিকে রাত হলেই সেই ডাক্তার বাবুর ঘর থেকে ভেসে আসতো এস্রাজের সুর। নৈহাটির ব্যানার্জী পাড়ার সেই বাড়িকে অনেকে গানের বাড়ী ও বলতো
শ্যামল মিত্রের কাকা বসন্ত কুমার মিত্র সেই সময়ে একজন প্রতিষ্ঠিত উচ্চাঙ্গসংগীত শিল্পী ছিলেন। যেনি সেই সময়ে গান গাইতে দিল্লি কিংবা এলাহাবাদ ও যেতেন। গানের বাড়ী সবাই গান বাজনা ভালোবাসে কিন্তু তা সত্ত্বেও শ্যামল মিত্রের বাবা চাইতেন না যে, গান-বাজনাকে পেশা করা হোক আর অন্যদিকে শ্যামল মিত্র গান গাইতেই চাইতেন ব্যাস হিন্দি সিনেমার মত বেঁধে গেলো সংঘাত!
তাঁর বাবা বলতেন গান গাইতে চাও গাইবে কিন্তু সেটাকে প্রফেশন ক্যানো করবে? আমি এস্রাজ বাজাই কিন্তু সেটা তো আমার পেশা নয়। ডাক্তারের ছেলে ডাক্তার হবে এটা একেবারেই সোজা কথা। শ্যামল মিত্র তিনি অনড়! বাবার সংগে কথা বার্তায় স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। শ্যামল মিত্র সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই বাড়ী থেকে বেরিয়ে যান ফিরে আসেন গভীর রাতে। পিতা-পুত্রের এই ফাইটে শ্যামল মিত্রের মা তিনি ছিলেন শ্যামল মিত্রের আশ্রয় স্থল। বাড়ির পিছনের দরজাটা তিনিই লুকিয়ে লুকিয়ে খুলে রাখতেন।
শ্যামল মিত্রের এরকম অসংখ্য গল্প রয়েছে যেগুলো এক পোষ্টে লিখা সম্ভব নয় তাই না? তো এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি যে গানের লিরিক্স শেয়ার করবো সেই গানের পিছনেও একটা আলাদা গল্প রয়েছে সেটা না হয় অন্যকোনে পোষ্টে বলবো...