বনশ্রী সেনগুপ্ত সারাজীবন সুধীন দাসগুপ্তকে গুরু বলে মেনে এসেছেন কিন্তু সুধীন বাবু ছাড়াও আরো একজন মানুষ ছিলেন যার কথা বা যার শব্দের দ্বারা, যার আদেশ দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন তিনি হেমন্ত মুখোপাধ্যায় শিল্পীকে সবসময় নিয়মানুবর্তী হতে হয় - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
একবার একটা অনুষ্ঠান করতে বনশ্রী সেনগুপ্ত বাহিরে গিয়েছিলেন। ঘটনা চক্রে সেখানে হেমন্ত বাবুও সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তো রাস্তায় যাবার সময়ে বনশ্রী সেনগুপ্তের গাড়ি রাস্তায় খারাপ হয়ে যায়। যে সময়ে পৌছানোর কথা ছিলো সেই অনুষ্ঠানে, সেই সময়ের পরে আরো ঘন্টা দুয়েক পরে পৌছেছিলেন তিনি
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ততক্ষণে মঞ্চে উঠে গিয়েছেন। বনশ্রী সেনগুপ্তের আসতে দেরী হচ্ছে শুনে তিনি নির্ধারিত সময়ের থেকে আরো বেশ কিছুক্ষন বেশি গান করেছেন যাতে দর্শকের অসন্তোষের সম্মুখীন হতে না হয়। এবার অনুষ্ঠানের ওয়ি রকম একটা সময়ে বনশ্রী সেনগুপ্ত ছল ছল চোখে হেমন্ত বাবুর কাছে গিয়ে বললেন - "দাদা, আসতে দেরি হলো; গাড়িটা রাস্তায় খারাপ হয়ে গিয়েছিলো"
হেমন্ত বাবু সস্নেহে হাত রেখেছিলেন বনশ্রী সেনগুপ্তের মাথায় কিন্তু তার সাথে সাথে এমন একটা কথা বলেছিলেন যেটা বনশ্রী সেনগুপ্ত পরবর্তীকালে নানান ইন্টার্ভিউতে বলেছেন যে আমার কাছে পাওয়া সেটা ছিলো অন্যতম সেরা অনুশাসন যে, রাস্তাঘাটে যাচ্ছো; গাড়ি খারাপ হতে পারে, তোমার নিজের ও শরীর খারাপ হতে পারে। হাতে সব সময় "সময়" নিয়ে বের হবে স্পেশালি যখন অনেক দূরে অনুষ্ঠান হয়ে থাকবে। এটা মনে রেখো - শিল্পীকে নিয়মানুবর্তী হতে হয়। পরবর্তীকালে প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানে বনশ্রী সেনগুপ্ত নিয়ম করে সময়ে পৌছাতেন। বার বার বলেছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এর ওই কথা গুলো তার জীবনে গেঁথে বসেছিলো।
🔊 শেষ কথা - এই পোষ্ট পড়ে যদি আপনার মনে হয় এখানে দেয়া কোন তথ্য ভুল আছে তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন। আমি আমার ভুল সংশোধন করার চেষ্টা করবো। লিখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে ❤️