কাজী নজরুল ইসলামের সৌন্দর্য ও আরাধনায় দেশ, দেবী ও নারীতে কোন পার্থক্য নেই। তার রচনার নির্মলতা সমস্থ স্থুলতা এবং সংকীর্ণতার উর্ধে নিশ্বাপ ভাবনায় রচনা করেছেন গান যা অতীন্দ্রিয় অনুভবে পৌছে গেছে।
কাজী নজরুল যে সমস্থ ভক্তিমূলক গান লিখেছেন সেখানে আল্লাহ যেমন আছেন তেমনি আছেন কৃষ্ণ বা কালীর কথা। রাঁধাভাবে বিভোর হয়ে কবি লিখছেন- সখি আমি না হয় মান করিছুনু, তোরা ত সকলেই ছিলি। ফিরে গেলো হরি তোরা পায়ে ধরি ক্যানো নাহি ফিরাইলি?
আবার অন্যগানে লিখছেন - আল্লাহ আমার প্রভু! আমার নাহি নাহি ভয়। আমার নবী মুহাম্মদ, যাহার তারিফ জগতময়। সেই তিনিই আবার লিখলেন- শ্যামা নামের লাগলো আগুন আমার দেহ ধুপকাঠিতে। যতজানি সুভাস তত ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে।
এখানে কাজী নজরুল ইসলাম অন্য সকলের থেকে আলাদা। মহাশক্তি তাঁকে যে যা নামেই ডাকুক; এই মহাশক্তির কাছে আত্মসমর্পণই হলো তার প্রণাম মন্ত্র। আজকের এই পোষ্টে আমি শেয়ার করবো তেমন ই একটা শ্যামাসঙ্গীতের গানের লিরিক্স
শ্যামা নামের লাগলো আগুন (Shyama Naamer Laglo Aagun)
🎧 Song Credits:
অ্যালবাম - Ma Jar Anandamayee
Shyama Naamer Laglo Aagun Song Lyrics 👇
শ্যামা নামের লাগলো আগুন, আমার দেহের ধূপ কাঠিতে (x2)
যত জ্বালি সুবাস তত
যত জ্বালি সুবাস তত, ছড়িয়ে পড়ে চারিভিতে।
(মা) শ্যামা নামের লাগলো আগুন, আমার দেহের ধূপ কাঠিতে
ভক্তি আমার ধূমের মত
ভক্তি আমার ধূমের মত, উর্দ্ধে ওঠে অবিরত।
(মা) ভক্তি আমার ধূমের মত উর্দ্ধে ওঠে অবিরত
শিব-লোকের দেব-দেউলে মা
শিব-লোকের দেব-দেউলে মা’র
শ্রীচরণ পরশিতে মা মা মা...
শ্যামা নামের লাগলো আগুন, আমার দেহের ধূপ কাঠিতে
অন্তর-লোক শুদ্ধ হল, পবিত্র সেই ধূপ সুবাসে (x2)
ওরে মা’র হাসিমুখ চিত্তে ভাসে
মা’র হাসিমুখ চিত্তে ভাসে, চন্দ্র সম নীল আকাশে।
সব কিছু মোর পুড়ে কবে, চিরতরে ভস্ম হবে।
সব কিছু মোর পুড়ে কবে
মা মা মা...
সব কিছু মোর পুড়ে কবে, চিরতরে ভস্ম হবে।
মা’র ললাটে আঁকব তিলক
মা’র ললাটে আঁকব তিলক সেই ভস্ম বিভূতিতে।।
বিভূতিতে,
(মা) শ্যামা নামের লাগলো আগুন, আমার দেহের ধূপ কাঠিতে
যত জ্বালি সুবাস তত, ছড়িয়ে পড়ে চারিভিতে।
(মা) শ্যামা নামের লাগলো আগুন, আমার দেহের ধূপ কাঠিতে
NOTE: আমি যতদূর জানি এই গানটার প্রথম সুর করেছিলেন
চিত্ত রায় এবং গানটি গেয়েছিলেন
মৃণালকান্তি ঘোষ। পণ্ডিত
অজয় চক্রবর্তীর কন্ঠ নিয়ে কথা বলবো এতো সাহস আমার নেই, তবে এই গান টা ভালো গাইতেন
কুমার শানু দা। আর হ্যা,যে সব গানের একাধিক ভার্সন পাওয়া যায়, সেগুলোর মধ্য থেকে আমি সাধারণত সেরা ভার্সনটাই আমার সংগ্রহে রাখি; একাধিক উন্নত মানের ভার্সন হলে সবগুলোই আমার সংগ্রহে রেখে দিই।
🔊 আমার মতামত - পণ্ডিত
অজয় চক্রবর্তী এক ও অদ্বিতীয়। অসাধারণ গায়নশৈলী, অতুলনীয় ভক্তি আবেগ মথিত সুরের মূর্ছনায় মনটা ভরে গেলো আমার। এমন কন্ঠে ভক্তি রসে সিক্ত গান শুনতে পাওয়া দৈব আশীর্বাদ।
গুরুজী যেভাবে ডাকলেন মা কে, মনে হয় মা সামনে বসেই শুনছিলেন ডাক।
অসাধারণ সৃষ্টি এবং
গুরুজীর গায়কী তে আরো মধুর হয়ে উঠেছে ভক্তিভাবের চরমতম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কী অপার ভক্তি ছিল
কাজী নজরুল ইসলামের মধ্যে। নাহলে একজন মুসলমান কবি হয়ে হিন্দু দেব-দেবীর নামে এত মধুর গান লিখতে পারে। আসলে
কাজী নজরুল ইসলাম একজন অসাধারণ মানুষ যার গুনগান এই সামান্য কয়েকটি লেখা দিয়ে প্রকাশ করা যাবে না। তিনি মহান। মুসলমান মানুষ হয়েও
হিন্দু ধর্মের উপর এত জ্ঞান তা আমার এক হিন্দু হয়েও নেই। এটাই পার্থক্য। তাই তো তিনি অমর একজন
কবি ❤️